দুই কেজি ওজন কমাতে কত ক্যালরি বার্ন করতে হয়?

দুই কেজি ওজন কমাতে কত ক্যালরি বার্ন করতে হয় ? 

 

                                      দুই_কেজি_ওজন_কমাতে_কত_ক্যালরি_বার্ন_করতে_হয়


যারা ওজন কমাতে চান তাদের মধ্যে এই প্রশ্নটা আসাটা খুব স্বাভাবিক যে কতোটুকু ক্যালরি বার্ন করতে পারলে আমার ২ কেজি ওজন কমবে । তাহলে চলুন আগে একটু অংক কষে আসি, এরপর জানা যাবে কীভাবে সংখ্যা গুলোকে আমরা বাস্তবে রূপ দিতে পারবো । 


পোষ্ট সূচিপত্রঃ  দুই কেজি ওজন কমাতে কত ক্যালরি বার্ন করতে হয় ? 


দুই কেজি ওজন কমানোর জন্য আমাদের মোটামুটি কম ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে অথবা বার্ন করতে হবে । এর মানে হলো আপনি যদি দুই সপ্তাহে একটি হেলদি ডায়েট ও কিছু এক্সারসাইজ ফলো করে দুই কেজি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে টোটাল ক্যালরি ঘাটতিতে থাকতে হবে । 

 


  • দুই সপ্তাহে দুই কেজি ওজন কি আসলেই কমানো সম্ভব? 

প্রত্যেকের শরীরের গড়ন ও গঠন ভিন্ন, তবে সঠিক উপায়ে চললে খুব স্বাস্থ্যকরভাবেই দুই সপ্তাহে দুই কেজি ওজন আপনি কমাতে পারেন, এবং সেইটা ফ্যাট লস । শুধু আপনার শরীরের পানির পরিমাণ কমবে না । 

 

  • এই পর্যায়ে ফ্যাট লস এবং ওয়াটার লস নিয়ে কথা বলা জরুরী !

অনেক সময় দেখবেন কোনো রোগের কারণ বা এক্সারসাইজ/ ডায়েট শুরু করার প্রথম কয়েকদিনের মধ্যেই আপনার কয়েক কেজি ওজন হঠাৎ করেই কমে গেছে কিন্তু এরপর সেটা আটকে আছে । ধরুন, আপনি ৬৫ কেজি ওজনে থাকা অবস্থায় ডায়েট শুরু করেছেন, প্রথম ১- ২ সপ্তাহের মধ্যে আপনার হঠাৎ ওজন কয়েক কেজি কমে ৬০ হয়ে গেল, কিন্তু এরপর আর ওজন কমছেই না, ৬০তেই আটকে আছে । এই ঘটনাটা হলো ওয়াটার লস ।  কিন্তু আপনি যখন ক্যালরি ঘাটতিতে ভুগবেন ( calorie deficeit), তখন আপনার ওজন খুব ধীরে ধীরে কমবে । কারণ আপনি কোনো ক্র্যাশ ডায়েট ফলো করছেন না । এবং এইটা টেকসই হবে কারণ আপনার অভ্যেসের মধ্যেই তখন আপনার ডায়েট চলে এসেছে । একইসাথে পুষ্টিরও কোনো কমতি নেই । তাই যদি আপনার খুব বিশেষ কোনো উপলক্ষ্য না থাকে তাহলে ক্র্যাশ ডায়েট না করে ফ্যাটলসের দিকে যাওয়া ভালো একটি উপায় হবে । আবারও ফিরে আসি দুই সপ্তাহে দুই কেজি ওজন কমানোর সম্ভাবনা- তে । 

দুই_কেজি_ওজন_কমাতে_কত_ক্যালরি_বার্ন_করতে_হয়

শারীরিক গড়ন বা গঠন আলাদা হলেও ফ্যাট লসের ক্ষেত্রে কয়েকটা ফ্যাক্টর সবার জন্য সমান, এগুলো হলো- 

     ১. শুরুর ওজন
     ২. অ্যাকটিভিটি লেভেল
     ৩. পুষ্টির পরিমাণ
     ৪. ঠিকমতো ঘুম
     ৫. হরমোনাল ফ্ল্যাকচুয়েশন

 

এই ব্যাপারগুলোকে মাথায় রেখে যদি আপনার ডায়েট প্ল্যান এবং এক্সারসাইজ সাজান তাহলে সেক্ষেত্রে দুই সপ্তাহে খুব স্বাস্থ্যকরভাবেই ১৫৪০০ ক্যালরি বার্ন করা সম্ভব এবং দুই কেজি ওজনও কমানো সম্ভব । 

 

 ১. প্রচুর পানি পান করা 


যদি হুট করেই খিদে পায় তাহলে আগে এক গ্লাস পানি পান করে নিন, অনেক সময় দেখা যায় এইটা শুধু তৃষ্ণাই ছিলো । আধা ঘন্টা অপেক্ষা করার পরেও যদি ক্ষিদে পায় তাহলে, একটু মৌসুমি ফল খেয়ে নিন । 

 

 ২. ধীরে খাবার খাওয়া 


গবেষণায় পাওয়া গেছে যে আমরা খাওয়ার সময় যখন সময় নিয়ে চিবিয়ে পুরোটা খাই তখন মস্তিষ্ক সিগন্যাল পায় যে অনেক বেশি খাওয়া হয়েছে এবং পেট বেশিক্ষণ ভরা থাকে, যদিও আপনি হয়তো খাবারের পরিমাণ বাড়াননি !

 

৩. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া 


ফাইবার বেশ কাজের একটা উপাদান যখন আপনি ওজন কমাতে চাচ্ছেন । ফাইবার অনেক সময় পর্যন্ত পেট ভরা রাখে এবং এতে ক্যালরি থাকে না । এর সাথে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সহ অনেক শারীরিক জটিলতার সমাধান দেয় । তো এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইলে ফাইবারের পরিমাণ বাড়িয়ে নিন ডায়েটে । 


 ৪. প্লেট সাইজ কমিয়ে নিয়ে আসুন 


প্লেটের সাইজ যদি বড় হয় তাহলে আমাদের মন চাইবে একটু বেশি খাই কারণ প্লেট ভরে খাবার না খেলে আমদের আত্মিক শান্তি আসে না, সারাদিন মনে হয় আবার ক্ষুধা লাগছে ! কিন্তু ওজনও তো কমাতে হবে, কী করা যায় ? তাহলে প্লেটের সাইজটা কমিয়ে নিন । বড় প্লেটের জায়গায় ছোটো প্লেটে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে, বড় প্লেটের জায়গায় ছোটো প্লেটে খাবার খেলে প্লেট ভরেও খাওয়া হবে,মন ভরেও খাওয়া হবে ,আবার ওজন ও কমে আসা শুরু করবে । 


 ৫. প্রোটিন বাড়িয়ে দিন খাবারে 


আমরা যখনই খাবার খাবো তখন কার্বোহাইড্রেট আর ফ্যাট খাবার কমিয়ে দিয়ে আমরা প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণ এ খাবো । এতে করে আপনার সুবিধা দুই দিক থেকে । প্রোটিন আমাদের শরীরের বিল্ডিং ব্লক করে থাকে তাই প্রোটিন কিছুটা বেশি খেলে ও আমাদের  শরীরের জন্য কোনো ক্ষতি নেই । আর প্রোটিন আপনাকে অনেক সময় পর্যন্ত ‘ পেটভর্তি আছে ’ এমন অনুভূতি দেয় । তাই অস্বাস্থ্যকর আর চিনিতে ভরা স্ন্যাক্স খাওয়ার ইচ্ছেও কমে যায় । 

 

দুই_কেজি_ওজন_কমাতে_কত_ক্যালরি_বার্ন_করতে_হয়

  •  পরিশেষে

যতো কৌশলই থাকুক না কেনো দিনশেষে ওজন কমাতে আপনাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে আপনার নিজের ইচ্ছে এবং ধারাবাহিকতা । এই দুটো যত বেশি জিইয়ে থাকবে, ওজনও তত দ্রুত কমবে এবং আপনার নিজের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে । তাই ডায়েট, এক্সারসাইজ সবকিছুর সাথে নিজের মনের যত্নটাও জরুরী! 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url